যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারির মধ্যেই চীন সফর যাচ্ছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট

প্রকাশকালঃ ০২ মার্চ ২০২৩ ০৪:৩৩ অপরাহ্ণ ৩৪১ বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারির মধ্যেই চীন সফর যাচ্ছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট

ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে অস্ত্র দেওয়া নিয়ে চীনকে হুঁশিয়ার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ এক মিত্রকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিয়েছে বেইজিং। এই মিত্র হলেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কো।

মঙ্গলবার তিন দিনের সফরে চীন যাওয়ার কথা লুকাশেঙ্কোর। সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের আমন্ত্রণে দেশটি সফরে আসছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট। এ সময় তিনি চীনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

গত সেপ্টেম্বর উজবেকিস্তানে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে সম্মেলনের বাইরে এই দুই নেতা আলাদা বৈঠক করেছিলেন। এ সময় তাঁরা দুই দেশের সম্পর্ককে ‘সার্বিক সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারত্ব’-এ উন্নীত করতে সম্মত হয়েছিলেন। সেখানে পুতিনও ছিলেন। এই সফরের ধারাবাহিকতাতেই আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কোর এ সফর।

সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ইউক্রেন যুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ঢালছে, সেখানে চীন এ সংকট উত্তরণে ‘সক্রিয়ভাবে শান্তি আলোচনা এবং রাজনৈতিক নিষ্পত্তির প্রচার করছে’। তবে মঙ্গলবার বেইজিং তাদের এমন দাবি থেকে কিছুটা পিছিয়ে গেছে।

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধ বন্ধে গত শুক্রবার শান্তি আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে চীন। তারা এ সংকটের ‘রাজনৈতিক সমাধান’ বিষয়ে ১২ দফা প্রস্তাব প্রকাশ করেছে। তবে চীনের এই প্রস্তাবের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন পশ্চিমা নেতারা। তাঁরা মনে করেন, চীন ইতিমধ্যেই রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে আছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সি চিন পিং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনেস্কির সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিভিন্ন উপলক্ষে তাঁর কয়েকবার কথা হয়েছে। এমনকি এসসিও সম্মেলনে দুজনের সরাসরি কথাও হয়।

কিয়েভের উত্তরে ইউক্রেনীয়-বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে রুশ সেনাদের ইউক্রেন আক্রমণ  চালানোর সুযোগ করে দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা বেলারুশের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এমনিতেই এখন পশ্চিমা দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বেলারুশের সম্পর্ক তেমন একটা ভালো নয়। বেলারুশে ২০২০ সালের নির্বাচনে আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কোর জয়কে স্বীকৃতি দেয়নি তারা। এই নির্বাচনের ফলাফলের প্রতিবাদে দেশটিতে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভও হয়েছিল। পরে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে তা দমন করা হয়।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে রাশিয়া আবার বেলারুশের মাটি ব্যবহার করে আক্রমণ চালাতে পারে, অথবা বেলারুশের সেনারা যুদ্ধে যোগ দেবেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে মস্কো সফরের আগপর্যন্ত আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কো দাবি করে আসছিলেন, যতক্ষণ না

তাঁর দেশ আক্রমণের শিকার হয়, ততক্ষণ ইউক্রেনে তাঁর দেশের সেনা পাঠানোর ‘কোনো সুযোগই’ নেই।চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবর অনুয়ায়ী, এক দশক আগে চালু হওয়া চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উন্নয়ন উদ্যোগে প্রথম দিকে যোগ দেওয়া দেশগুলোর একটি বেলারুশ। গত বছর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আগের বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।