পরিবারসহ হাজির রিপন মিয়া: জানালেন সেই দিনের পুরো ঘটনা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:১৩ অপরাহ্ণ   |   ৯ বার পঠিত
পরিবারসহ হাজির রিপন মিয়া: জানালেন সেই দিনের পুরো ঘটনা

গত তিন দিন ধরে অনলাইন দুনিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া। মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে তাঁকে নিয়ে নানা অভিযোগ তোলা হয়—যেখানে বলা হয়, তিনি বাবা-মায়ের খোঁজ রাখেন না এবং স্ত্রী-সন্তানদের অস্বীকার করেছেন। এ প্রতিবেদন প্রচারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক ও সমালোচনা।
 

এরই মধ্যে বুধবার ঢাকায় হাজির হন রিপন মিয়া। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান। গণমাধ্যমের সামনে তিনি বিস্তারিতভাবে জানান, আসলে সেদিন কী ঘটেছিল। কখনো হাসলেন, কখনো পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে আবেগে কেঁদে ফেললেন।

রিপন বলেন,

“কী থাইক্যা কী হইল, কিছুই বুঝতেছিলাম না ভাই। ঘুম থেকে উঠে চা খাইতে গেছিলাম, হঠাৎ কয়েকজন সাংবাদিক আইসা ক্যামেরা ধরল। মজা করতে বলল, আমি ছন্দ বলে মজা করছিলাম। কিন্তু একপর্যায়ে ওরা আমার পরিবার নিয়ে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করতে লাগল। আগে তো জানায়নি, তারা আমার বাড়ি গিয়েছিল। পরে টিভিতে দেখি, কথাগুলো কেটে কেটে দেখানো হয়েছে। আমি তো সব বলছিলাম, কিন্তু ভিডিওতে পুরোটা রাখে নাই।”

তিনি আরও বলেন, প্রতিবেদনে তাঁকে স্ত্রী-সন্তান অস্বীকার করার অভিযোগ আনা হয়েছে, যা পুরোপুরি ভুল বোঝাবুঝি।

“দেড় বছর আগে এক ভাইয়ের ভিডিওতে আমি আমার বউ-সন্তান নিয়ে কথা বলছিলাম। কিন্তু ওই সাংবাদিকরা যখন বারবার একই প্রশ্ন করতে থাকে, তখন আমি মজার ছলে বলেছিলাম—‘আমি বিয়া করিনি’। কে জানত, এই কথাই এমন ঝড় তুলবে!”

বাবা-মাকে অবহেলার অভিযোগের বিষয়ে রিপনের ব্যাখ্যা,

“আমি নিজেই উনাদের জন্য আধাপাকা ঘর বানাইতেছি। তিনটা রুম করছি—একটায় আমি বউ-বাচ্চা নিয়া থাকব, আরেকটায় আব্বু-আম্মু থাকবেন। আমি কেমনে দেখি না উনাদের? কোন মাসে টাকা দিই নাই, এইটা জিজ্ঞেস করলে ভালো হইত।”

পেশায় কাঠমিস্ত্রি রিপন বলেন, ভিডিও বানানো তাঁর ভালোবাসা, পেশা নয়।

“আমি কাঠমিস্ত্রি মানুষ, আল্লাহর রহমতে কাজের অভাব হয় না। ভিডিও না বানাইলেও আমার সংসার চলে। যদি এতে এত সমস্যা হয়, তাহলে ভিডিও বানানোই বাদ দিব।”

অন্যদিকে রিপনের মা ফাতেমা বেগম জানান, প্রতিবেশীদের কথায় ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত।

“অনেকে কইছিল—‘তোমার ছেলে লাখ লাখ টাকা কামায়, তোমারে কী দেয়?’ আমি ভাবছিলাম সাংবাদিকরা আইছে সাহায্য করতে। বুঝি নাই, তারা উল্টা আমাদের বিপদে ফেলবে। লোভে পড়ে আমার ছেলেরে কষ্ট দিছি।”

তিনি আরও বলেন,

“রিপন একা না, আমার অন্য ছেলেরাও আমাদের দেখাশোনা করে। আমরা গরিব মানুষ, ওদের না থাকলে চলব কেমনে?”

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে প্রচারিত প্রতিবেদনে রিপনের মায়ের বক্তব্য তুলে ধরা হয়, যেখানে তিনি বলেছিলেন, “আমরা গরিব, তাই হয়তো ও এখন পরিচয় দিতে চায় না।”
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা ও নানা আলোচনা।