পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের তৃতীয় সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে দুইজন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতার জবানবন্দি ই-মেইলের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীতে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি ও বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ. ল. ম. ফজলুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জবানবন্দি দেওয়া দুই নেতা হলেন—আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আজম।
মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত ৮ জন রাজনৈতিক ব্যক্তির জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জনের সাক্ষ্য কারাগারে গিয়ে, ৩ জনের সাক্ষ্য সরাসরি এবং ২ জন পলাতক নেতা ই-মেইলে জবানবন্দি দিয়েছেন।
তদন্ত কমিশন ৫৫ জন সামরিক কর্মকর্তার জবানবন্দি গ্রহণ করেছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধানরা, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং ঘটনাকালে দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যান্য কর্মকর্তারা।
অসামরিক ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে সাংবাদিক, আমলা ও আগের তদন্ত কমিটির সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত।
কারাগারে দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ জন বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। তাঁরা ঘটনার বিবরণ দেওয়ার পাশাপাশি জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। এছাড়া কারামুক্ত ২৯ জন সদস্যেরও সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
তৎকালীন আইজিপি, ডিএমপি কমিশনারসহ বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৯ জন বেসরকারি ব্যক্তি—ব্যবসায়ী, টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞসহ নানা পেশার ব্যক্তিদের কাছ থেকেও তথ্য নেওয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিশন ৬টি দেশের দূতাবাস এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
মোট সাক্ষ্যগ্রহণের বিষয়ে কমিশন জানায়, এখন পর্যন্ত ১৫৮ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। আরও প্রায় ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পিলখানা ট্র্যাজেডি সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য বা প্রমাণ থাকলে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা গণমাধ্যমকে তা কমিশনের কাছে সরবরাহ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।