পলাশবাড়ীতে আওয়ামীলীগের নেত্রী হয়ে গেলো জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি 

প্রকাশকালঃ ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:০৬ অপরাহ্ণ ০ বার পঠিত
পলাশবাড়ীতে আওয়ামীলীগের নেত্রী হয়ে গেলো জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি 

ঢাকা প্রেস
সিরাজুল ইসলাম রতন গাইবান্ধা প্রতিনিধি:-


টাকার বিনিময়ে আওয়ামীলীগের সাবেক নেত্রীকে গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা মহিলাদলের নব অনুমোদিত কমিটির সভাপতির পদ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল সমালোচনা। গত ২০ ডিসেম্বর জেলা মহিলাদলের সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি দলীয় প্যাডে পলাশবাড়ী উপজেলা মহিলাদলের কমিটির সেই তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হলে তা মূহুর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। এরপর হতে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের দলীয় নেতাকর্মী মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে৷ তারা বিভিন্ন ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন৷ 

 

 

তালিকা অনুসন্ধানে দেখা গেছে পলাশবাড়ী উপজেলা মহিলাদলে যে নারীকে সভাপতি করা হয়েছে তার নাম আরজিনা পারভীন চাদনী। ইতিপূর্বে তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন এবং তিনি সেই সময় বিএনপি'র বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। এটি নিয়ে বিএনপিসহ এর অঙ্গসংগঠন গুলোর নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। তাদের কেউ কেউ প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন যে টাকার বিনিময়ে এই কমিটি দেয়া হয়েছে।
 


ঐ কমিটিতে যে শুধুমাত্র চাঁদনীই চিহ্নিত আওয়ামীলীগ তা নয়, সাংগাঠনিক পদে যাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তিনিও একজন সক্রিয় মহিলা আওয়ামীলীগ কর্মী ছিলেন। একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে নাসিমা আকতার ৪ নং বরিশাল ইউনিয়নের তাঁতীলীগের সভানেত্রী ছিলেন।
 


এই ব্যাপারে পলাশবাড়ী পৌরসভার বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপি'র যুগ্ন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সাথে কথা হলে তিনি জানান, পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপি'র মহিলাদলের কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে, ৫ আগস্টের পূর্বে দলের পক্ষে তাদের কোনো ভূমিকাই ছিল না। অবশ্যই অর্থের বিনিময়ে এই কমিটি দেয়া হয়েছে।" অনতিবিলম্বে তিনি এই কমিটি বাতিল করে প্রকৃত বিএনপি এবং ত্যাগী কর্মীদের সমন্বয়ে একটি শতভাগ স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
 


গাইবান্ধা জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মিল্লাত সরকার মিলন বলেন, আগমী ১৬/১৭ বছরের লড়াই সংগ্রামে যার কোন ছায়া পর্যন্ত কেউ দেখেনি সে কিভাবে সভাপতির মত একটা পদ পায় আমার বুঝে আসে না। আমাদের এই রকম হাইব্রিড নেত্রীর দরকার নেই। যত দ্রুত সম্ভব এই কমিটি বাতিল করতে হবে।
 

জেলার সহ সম্পাদক মিজানুর রহমান নিক্সন বলেন, মাঠে লড়াই সংগ্রাম আমরা করি, হঠাৎ করে কেউ যদি এসে বলে আমি সভাপতি তাকে তো আমরা কেউ মেনে নিবো না। ৫ আগষ্টের পরে জম্ন নেয়া কোন নেতা পলাশবাড়ীতে রাজনীতি করতে পারবে না। তাই এই কমিটির কোন গ্রহন যোগ্য আমাদের কাছে নেই।
 

উপজেলা যুবদলের সিনিয়ার যুগ্ন আহবায়ক সাগর সরকার মিনু বলেন, যদি আওয়ামীলীগে মহিলা সংরক্ষিত আসনের মনোনয়ন কিনেছে, তিনি কিভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহিলা দলের সভাপতি হয়। যারা এই কমিটি দিয়েছে তারা কি অন্ধ। কোন খোজ খবর না নিয়ে কমিটি দিয়েছে। আমরা জিয়ার সৈনিক রাজপথ আমাদের ঠিকানা। আমরা কখনও আওয়ামীলীগে পেতাত্মাদের দলে নিবো না।
 

আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে ছবি তোলার এ বিষয়ে আরজিনা পারভীন চাদনী জানান,আওয়ামীলীগ করার প্রশ্ন উঠে না, এরকম ছবি বিএনপি নেতাদের সাথেও রয়েছে৷ আমার বাবা ও পরিবার বিএনপির রাজনীতি করেন এবং এখনো একজন জনপ্রতিনিধি।
 

গাইবান্ধা জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী শোভা আকতারের বিরুদ্ধে টাকা গ্রহণের বিনিময়ে কমিটি দেয়ার যে অভিযোগ উঠেছে সেই সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে বলেন,ভালো লাগছে আমার দলের কমিটি আমি দিয়েছি,আপনার মাথা ঘামাচ্ছেন কেন। 
 

এবিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা.মইনুল হাসান সাদিক বলেন,তিনি উক্ত কমিটি গঠন বা অনুমোদনের বিষয়ে তাকে কেউ কিছু জানায়নি৷ তিনিও এ কমিটির গঠনের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।