মোহাম্মদ করিম,খাগড়াছড়ি:-
খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় বিভিন্ন সংগঠনের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। বুধবার (২৯ মে) মধ্যরাতে উপজেলার জালিয়াপাড়া বাজার এলাকায় ২০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি, সিন্দুকছড়ি জোনের একটি সি-টাইপ টহল দল এ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন পেট্রোল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মো. শাইয়েন কাদির।
অভিযানকালে মো. খলিলুর রহমান (৪৭) ও মো. আবু সায়েদ (৪৫) নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ ও বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদায়ের রশিদ বই উদ্ধার করা হয়। উভয়েই গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি এলাকার বাসিন্দা।
নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চাঁদা উত্তোলনের সময় তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, গুইমারা উপজেলার অন্তত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রতিদিন বিভিন্ন সংগঠনের নামে কাঠ, বাঁশ, ইট, বালু ও অন্যান্য মালবাহী যানবাহন থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করা হতো।
চাঁদা আদায়ের প্রধান স্থানগুলো ছিল:
জালিয়াপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে, কাসেম হোটেলের পাশে, জালিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি, গুইমারা বাজারের কাজী টাওয়ার, হাতিমোড়া পুলিশ বক্সের সামনে।
প্রতিটি ট্রাক বা পিকআপ থেকে চাঁদার পরিমাণ ছিল ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। চাঁদা না দিলে চালকদের গাড়ি আটকে রাখার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাকচালক জানান, “প্রতিদিন রাস্তায় চাঁদা দিতে হয়। না দিলে গাড়ি আটকে রাখে। খাগড়াছড়ি থেকে বারইয়ারহাট পর্যন্ত প্রতি পিকআপকে প্রায় আট হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়।”
তিনি আরও জানান, “জেলা সদর থেকে মাটিরাঙ্গা, গুইমারা, রামগড়, হেয়াকো হয়ে বারইয়ারহাট পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনকেও অবহিত করেছি।”
অভিযান সম্পর্কে ক্যাপ্টেন মো. শাইয়েন কাদির বলেন, “গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চাঁদা উত্তোলনের সময় দুজনকে আটক করা হয়েছে। সংগঠনের নামে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।”
আটককৃতদের গুইমারা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, “চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গুইমারায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”