কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। রোববার (২৯ জুন) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি দ্রুত, নিরপেক্ষ ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে আসক উল্লেখ করে, এই ঘটনা শুধু একটি অপরাধ নয়, বরং নারীর প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক সহিংসতার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ, যা দেশের সংবিধান, আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের মৌলিক ভিত্তিকে চরমভাবে লঙ্ঘন করে।
সংগঠনটি জানায়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, গত ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামে ফজর আলী নামের রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি দরজা ভেঙে ওই নারীর ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন। পরে সেই সহিংসতার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার সময় ভুক্তভোগী নিজ বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন।
আসক মনে করে, এ ধরনের বর্বর ঘটনায় ব্যক্তির পাশবিক মনোভাবের পাশাপাশি রাষ্ট্রের নীরবতা ও বিচারহীনতার দীর্ঘদিনের সংস্কৃতিও দায়ী। একজন নারী যদি নিজের ঘরেও নিরাপদ না থাকেন, তবে তা রাষ্ট্রের ব্যর্থতার পরিষ্কার ইঙ্গিত দেয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অতীতেও নারীর ওপর হামলা ও নির্যাতনের বহু ঘটনায় বিচার বিলম্বিত হয়েছে বা প্রভাবশালীদের ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনাও সেই ধারাবাহিকতারই অংশ হতে পারে।
আসক জোর দাবি জানায়,
এ ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে,
অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে,
ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে,
প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ, আইনি সহায়তা, মানসিক ও স্বাস্থ্যসেবা অবিলম্বে প্রদান করতে হবে।
সংগঠনটি সতর্ক করে জানায়, এ ধরনের বর্বরতার কঠোর বিচার না হলে নারীর অধিকার, মর্যাদা এবং আইনের শাসন হুমকির মুখে পড়বে। তাই রাষ্ট্রকে এখনই কঠোর বার্তা দিতে হবে—এ দেশে এমন অপরাধের কোনো স্থান নেই।
আসক শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানায়, ঘটনাটিকে দায়সারাভাবে নয় বরং পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মুখোমুখি করতে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।