১২ বছর পর আওয়ামী লীগ নেতার দখল থেকে সরকারি সড়ক উদ্ধার

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৬ মে ২০২৫ ০৫:০৭ অপরাহ্ণ   |   ৩৪২ বার পঠিত
১২ বছর পর আওয়ামী লীগ নেতার দখল থেকে সরকারি সড়ক উদ্ধার

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-



কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার উমরমজিদ ইউনিয়নের ডাংহাট এলাকায় প্রায় ৪ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র গ্রামীণ সড়কটি ১২ বছর পর উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন। দীর্ঘদিনের অবরুদ্ধ এই পথ খুলে দেওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে এলাকাবাসীর মাঝে, তবে সড়কটির দ্রুত সংস্কার নিয়ে রয়েছে গভীর উদ্বেগ।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ফসলি জমির ভেতর দিয়ে আঁকাবাঁকা করে লাল নিশানা টাঙিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে উদ্ধার হওয়া সড়কটি। তবে বাইরে থেকে দেখে বুঝার উপায় নেই যে এটি একটি সরকারি সড়ক। দীর্ঘ ১২ বছরে সড়কটি কেটে আবাদি জমিতে রূপান্তর করে নিয়েছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী মহল।
 

জানা গেছে, প্রায় ৭০০ মিটার দীর্ঘ এই সরকারি সড়কটি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহারে দখলে চলে যায়। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম মাষ্টার এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানার বিরুদ্ধে সড়ক দখলের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর মাঝে থাকলেও কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।
 

সড়ক দখলের কারণে হাজারো মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে বিকল্প পথে, কখনো ফসলি জমির আইল দিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী, শিশু ও শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল সীমাহীন দুর্ভোগ। বর্ষা মৌসুমে কাদা-পানিতে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়তো।
 

স্থানীয় বাসিন্দা মাহফুজার রহমান বলেন,
"দীর্ঘ ১২ বছর পর সড়কটি যখন লাল নিশানা টাঙিয়ে উদ্ধার করা হলো, তখন আমাদের মনে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। এখন দ্রুত রাস্তা মাটি দিয়ে ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করে তোলার দাবি জানাচ্ছি।"

 

একই এলাকার গৃহবধূ রহিমা বেগম বলেন,
"সড়ক না থাকায় ছেলে-মেয়েরা ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারতো না। আমরা অনেক কষ্ট করেছি। এখন রাস্তা উদ্ধার হয়েছে, আল্লাহর শুকরিয়া। যদি সরকার মাটি ফেলে রাস্তা ঠিক করে দেয়, তাহলে আর কিছু চাই না।"

 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
 

রাজারহাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশাদুল হক বলেন,
"জনগণের অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারি রেকর্ডভুক্ত সড়কটি উদ্ধার করা হয়েছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"