ঢাকা প্রেস,জবি প্রতিবেদক:-
ঢাকা ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যুর দায় হাসপাতালের ওপর চাপানো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার, অভিজিতের মৃত্যুর পর হাসপাতালে ও কলেজে হামলার প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনাবেল (অবসরপ্রাপ্ত) ইফফাত আরা।
তিনি বলেন, “অভিজিতের মৃত্যুর দিন রাতে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টির ৯০% সমাধান হয়ে গেলেও, অভিজিতের পরিবার ও শিক্ষার্থীরা তা জানাতে না পারায় এমন ঘটনা ঘটেছে।”
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “কোনো একটি মহল হাসপাতালের ওপর মিথ্যা দায় চাপানোর চেষ্টা করছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। রোগীর মৃত্যু হলেই ভুল চিকিৎসা বা দায়িত্বে অবহেলা বলে চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের লাঞ্ছিত করার প্রবণতা যেন নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে।” তিনি হাসপাতালের সকল চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরাপত্তা দাবি করেন এবং হাসপাতালের সেবার পরিবেশ নষ্ট করে, তাদের জিম্মি করে ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানান।
তিনি দাবি করেন, ন্যাশনাল কলেজে হামলায় প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে প্রায় ১,০০০ থেকে ১,৫০০ শিক্ষার্থী হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা ক্যাশ কাউন্টারেও ভাঙচুর করে নগদ টাকা লুট করেছে এবং হাসপাতালের ব্যাংক শাখাতেও আক্রমণ করেছে।”
অভিজিতের মৃত্যুতে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কলেজের উপ-পরিচালক ডা. মো. রেজাউল হক বলেন, “নিহত পরিবারের অনুরোধে আইসিইউ বিল ৩৬ হাজার টাকা স্থগিত করা হয়েছিল। পরে তারা অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায়, কিন্তু এর মাধ্যমে মৃত্যুর ঘটনা চাপা দেওয়া সম্ভব নয়।”
তিনি আরও জানান, “রাতের বেলায় হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকরা উপস্থিত থাকতেন না, তখন সিকিউরিটি ইনচার্জ ও ইমার্জেন্সি ডাক্তার ছিলেন। মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে এসে পরিস্থিতি উত্তেজিত করে, পরে পুলিশ ও আর্মির সহায়তায় হাসপাতাল রক্ষা করা হয়।”
এদিকে, অভিজিতের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও ডাক্তারের অব্যাহতি সম্পর্কে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করেছিল এবং মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল, তবে তারা প্রতিনিধি পাঠায়নি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে শেফাকে কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল।
সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের উত্তরে হাসপাতালে কয়েকজন ডাক্তার ও শিক্ষার্থী সমকালের সাংবাদিক ইমরান হোসাইনের ওপর চড়াও হন। এরপর সকল সাংবাদিক সংবাদ সম্মেলন ত্যাগ করলে, হাসপাতালের শিক্ষার্থী ও ডাক্তাররা তাদের ওপর হামলা চালান।