আরাকান আর্মির হাতে ১৯ বাংলাদেশি জেলে অপহরণ

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৭:২৮ অপরাহ্ণ   |   ৯০ বার পঠিত
আরাকান আর্মির হাতে ১৯ বাংলাদেশি জেলে অপহরণ

মঈনুদ্দীন শাহীন ( ষ্টাফ রিপোর্টার) কক্সবাজার:-
 

কক্সবাজারের টেকনাফে মাছ ধরার চারটি নৌকাসহ ১৯ মাঝিমাল্লাকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ধরে নিয়ে গেছে। তারা নাফ নদ থেকে মাছ ধরার পর ফেরার পথে এই অপহরণের শিকার হন।
 

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, ঘোলারচর ও নাফ নদের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। এর আগে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি নাফ নদের মোহনা থেকে অপহৃত চার বাংলাদেশি জেলেকে এখনো মুক্তি দেয়নি আরাকান আর্মি।
 

টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল জলিল জানান, আজ ফেরার পথে টেকনাফের মাছ ধরার দুটি ট্রলারসহ ৯ জন মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমার। এর আগে অপহৃত ৬ জেলেকেও এখনো মুক্তি দেওয়া হয়নি। এসব ঘটনার ফলে জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
 

শাহপরীর দ্বীপ মাঝপাড়া নৌঘাটের সাধারণ সম্পাদক আবদুর গফুর জানান, তার ঘাটের দুটি নৌকা— মো. কালাইয়া ও জাফর আলমের মালিকানাধীন— মাছ ধরতে গেলে আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে ধরে নিয়ে যায়। এতে জেলেদের পরিবার চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে।
 

টেকনাফ সীমান্তের বিজিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "নাফ নদ থেকে ট্রলারসহ জেলেদের নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তাদের দ্রুত ফেরানোর চেষ্টা চলছে।"
 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, "জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমরা শুনেছি। বিজিবির সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।"
 

স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী মো. তারেক উর রহমান বলেন, "এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে, যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। সমাধান না হলে জেলেরা মাছ ধরতে যেতে সাহস পাবে না, যা তাদের জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে বড় বাধা সৃষ্টি করবে।"
 

এর আগে, গত বছরের ৬ অক্টোবর সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট থেকে ছয়টি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে ৫৮ জেলে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যান। ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের নৌবাহিনী তাদের অপহরণ করে। সে সময় একটি টহলরত স্পিডবোট থেকে বাংলাদেশি একটি ট্রলারের দিকে গুলি ছোড়া হলে তিনজন জেলে গুলিবিদ্ধ হন, যার মধ্যে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের কঠোর প্রতিবাদের পর জেলেদের মুক্তি দেওয়া হয়। এছাড়া ১৫ অক্টোবর, মিয়ানমারের রাখাইনে বন্দি থাকা ১৬ বাংলাদেশি জেলেকে বিজিবি উদ্ধার করে দেশে ফেরত আনে।